ভৌত গঠন (Physical Structure) :
১. আবরণী : প্রতিটি মাইটোকন্ড্রিয়ন লিপোপ্রোটিন বাইলেয়ারের দুটি মেমব্রেন নিয়ে গঠিত।
২. প্রকোষ্ঠ : দুই মেমব্রেনের মাঝখানের ফাঁকা স্থানকে বলা হয় বহিস্থ কক্ষ (প্রকোষ্ঠ) বা আন্তঃমেমব্রেন ফাঁক এবং ভেতরের মেমব্রেন দিয়ে আবদ্ধ কেন্দ্রীয় অঞ্চলকে বলা হয় অভ্যন্তরীণ কক্ষ। অভ্যন্তরীণ কক্ষ জেলির ন্যায় ঘন সমসত্ত্ব , পদার্থ বা ধাত্র দ্বারা পূর্ণ থাকে। এই ধাত্র পদার্থকে ম্যাট্রিক্স বলে।
৩. ক্রিস্টি (Cristae) বা প্রবর্ধক : বাইরের মেমব্রেন সোজা কিন্তু ভেতরের মেমব্রেনটি নির্দিষ্ট ব্যবধানে ভেতরের দিকে ভাঁজ হয়ে আঙ্গুলের মতো প্রবর্ধক সৃষ্টি করে। প্রবর্ধিত অংশকে ক্রিস্টি (cristae) বলে।
৪. অক্সিসোম (Oxisome): মাইটোকন্ড্রিয়ার (Mitochondria) অন্তঃআবরণীর অন্তর্গাত্রে অতি সূক্ষ্ম অসংখ্য দানা লেগে থাকে। এদের অক্সিসোম বলে।
৫. ATP-Synthases ও ETC : ক্রিস্টিতে স্থানে স্থানে ATP-Synthases নামক গোলাকার বস্তু আছে। এতে ATP সংশ্লেষিত হয়।
৬. বৃত্তাকার DNA ও রাইবোসোম : মাইটোকন্ড্রিয়ার (Mitochondria) নিজস্ব বৃত্তাকার DNA এবং রাইবোসোম (70 S) রয়েছে।
রাসায়নিক গঠন (Chemical Composition) :
মাইটোকন্ড্রিয়ার (Mitochondria) শুষ্ক ওজনের প্রায় ৬৫% প্রোটিন, ২৯% গ্লিসারাইডসমূহ, ৪% লেসিথিন ও সেফালিন এবং ২% কোলেস্টেরল। লিপিডের মধ্যে ৯০% হচ্ছে ফসফোলিপিড, বাকি ১০% ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যারোটিনয়েড, ভিটামিন E এবং কিছু অজৈব পদার্থ।
মাইটোকন্ড্রিয়ার ঝিল্লি লিপো-প্রোটিন সমৃদ্ধ। মাইটোকন্ড্রিয়াতে প্রায় ১০০ প্রকারের এনজাইম ও কো-এনজাইম রয়েছে। এছাড়া এতে ০.৫% RNA ও সামান্য DNA থাকে। মাইটোকন্ড্রিয়ার অন্তঃঝিল্লিতে কার্ডিওলিপিন নামক বিশেষ ফসফোলিপিড থাকে।
মাইটোকন্ড্রিয়া (Mitochondria) র কাজ :
*কোষের যাবতীয় কাজের জন্য শক্তি উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণ করা।
*শ্বসনের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম, কো-এনজাইম প্রভৃতি ধারণ করা।
*নিজস্ব DNA, RNA উৎপন্ন করা এবং বংশগতিতে ভূমিকা রাখা।
*প্রোটিন সংশ্লেষ ও স্নেহ বিপাকে সাহায্য করা।
*শ্বসনের বিভিন্ন পর্যায় যেমন- ক্রেবস চক্র, ইলেকট্রন ট্রান্সপোর্ট, অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশন সম্পন্ন করা।
*এরা Ca, K প্রভৃতি পদার্থের সক্রিয় পরিবহনে সক্ষম।
শুক্রাণু ও ডিম্বাণু গঠনে অংশগ্রহণ করা।
*কোষের বিভিন্ন অংশে ক্যালসিয়াম আয়নের সঠিক ঘনত্ব রক্ষা করা।
*এতে বিভিন্ন ধরনের ক্যাটায়ন, যেমন-
Ca 2+,S 2+ ,Fe 2+ ,Mn 2+
ইত্যাদি সঞ্চিত রাখা।
*কোষের পূর্বনির্ধারিত মৃত্যু (apoptosis) প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা।
*রক্ত কণিকা ও হরমোন উৎপাদনে সহায়তা করা।
Read more